
প্রতিবেদক: Nayan Dewanji | ক্যাটেগরি: আন্তর্জাতিক | প্রকাশ: 12 Jun 2025, 9:07 PM


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দিল্লির আকাশে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক, বিষণ্নতা ও শোকের কালো ধোঁয়া। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান। ভেতরে ছিলেন প্রায় ২৫০ জন যাত্রী। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, একজন কানাডিয়ান ও সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক। বিমানটি যাচ্ছিল লন্ডনের উদ্দেশ্যে।
দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস, যার সূত্র—এয়ার ইন্ডিয়ার এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট।
দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে কতজন নিহত বা গুরুতর আহত হয়েছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো মনে করছে, হতাহতের সংখ্যা “উল্লেখযোগ্য” হতে পারে। বিভিন্ন টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে—উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ঘন ধোঁয়া আর আগুনের শিখায় মোড়ানো সেই মুহূর্ত আজও স্বজনদের চোখে বিভীষিকার মতো ধরা দিচ্ছে।
আহমেদাবাদ বিমানবন্দর সূত্র বলছে, উড্ডয়নের পরপরই ককপিট থেকে একবার “ইমার্জেন্সি” বার্তা পাঠানো হয়েছিল কন্ট্রোল টাওয়ারে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে যান্ত্রিক ত্রুটির কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি, তবে অভিজ্ঞ পাইলট ও এভিয়েশন বিশ্লেষকেরা বলছেন, ড্রিমলাইনারের ফ্লাইট কম্পিউটার বা ইঞ্জিন কনফিগারেশনে সামান্য গোলযোগও বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও পর্তুগাল ইতোমধ্যে নিজ নিজ নাগরিকদের বিষয়ে তথ্য চেয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ভারতীয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (DGCA) বলেছে, একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে বোয়িং কোম্পানির পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এবং ডেটা রেকর্ডার (ব্ল্যাক বক্স) খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি তৈরি রাখা হয়েছে মনোবিজ্ঞানী ও কাউন্সেলরদের। অনেকে খোঁজ পাচ্ছেন না তাদের স্বজনদের, অনেকে নাম দেখেছেন হাসপাতালের তালিকায়—কিন্তু নিশ্চিত হতে পারছেন না কী অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা।
এত উন্নত প্রযুক্তির একটি বিমানের এমন ভয়াবহ বিপর্যয় এক গভীর প্রশ্ন তুলেছে:
আকাশে কি সত্যিই আমরা নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যপরীক্ষা, পাইলট প্রশিক্ষণ এবং ফ্লাইট প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এই দুর্ঘটনা কেবল একটি বিমানের পতন নয়, বরং শত শত পরিবারে আলো নিভে যাওয়ার সম্ভাবনার নাম। পুরো বিশ্ব অপেক্ষা করছে—আরও নির্ভরযোগ্য তথ্য, আর একটু আশার খবরের জন্য। যাত্রীদের জীবন-মৃত্যুর অনিশ্চয়তা নিয়ে এই দুর্যোগকে স্মরণীয় করে রাখবে এভিয়েশন ইতিহাস।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

ছিনতাইয়ের ছলনায় সম্রাটের পরাজয়
নগরীর ব্যস্ততা যখন প্রতিদিনের মতোই ক্লান্ত বিকেল ছুঁয়ে চলছিল, তখন কুমিল্লার বাদুরতলা এক নতুন নাটকের...

বিজিবির অভিযানে কুমিল্লায় হুন্ডির ২৮ লাখ টাকা জব্দ
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লাকুমিল্লার সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর অভিযানে হুন্ডি...

রোমেনা আফাজ: সাহিত্যে তৈরি করেছিলেন নতুন পথ
এস ডি সুব্রত দস্যু বনহুরখ্যত লেখক রোমেনা আফাজের জন্ম ২৭ ডিসেম্বর ১৯২৬ সালে বগুড়া জেলার শেরপুরে...

সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কোটি টাকার মোবাইল ডিসপ্লে জব্দ করেছে...
নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এক কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ভারতীয় মোবাইল...

২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন!
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যা...

কুমিল্লার বরুড়ায় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের ইন্তেকাল, শোকের ছায়া শি...
বরুড়া উপজেলার শিক্ষা পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে কুমিল্লা মর্ডান হাসপাতালে...
