
প্রতিবেদক: Nayan Dewanji | ক্যাটেগরি: নারী ও শিশু | প্রকাশ: 4 Jul 2025, 3:50 PM



কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম (৪৫)–কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয় একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে। হৃদয়বিদারক এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে তিনজন পেশাদার ভাড়াটে খুনি। হত্যার পেছনে চুক্তির মূল্য ধরা হয়েছিল মাত্র ২ লাখ টাকা।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, গ্রেপ্তার চার আসামি—নিহতের ভাশুরের স্ত্রী নুরজাহান বেগম এবং ভাড়াটে খুনি আনোয়ার হোসেন, রুবেল আহমেদ মিন্টু ও মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জিল্লু—বুধবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
পুরনো জমি বিরোধ থেকে রক্তাক্ত প্রতিশোধ
পুলিশ জানায়, নিহত ফেরদৌসী বেগম এবং তার স্বামীর বড় ভাইয়ের স্ত্রী নুরজাহান বেগমের মধ্যে বাড়ির পাশের একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। বিরোধ মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিহিংসার পথ বেছে নেন নুরজাহান। তিনি আনোয়ার হোসেন নামের এক ভাড়াটে খুনির সঙ্গে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে ফেরদৌসীকে হত্যার চুক্তি করেন। পরে এই কাজে সহযোগিতা করে রুবেল ও জিল্লু।
পরিকল্পিত হত্যা ও মরদেহ গুম
গত ২৭ জুন সকালে নির্জন একটি বাগানে ফেরদৌসী বেগমকে হত্যা করে আসামিরা। পরে মরদেহটি একটি বস্তায় ভরে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ঘটনার পাঁচদিন পর ১ জুলাই সকাল ৮টার দিকে স্থানীয়রা দুর্গন্ধ ও সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখে ওই সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে।
দ্রুত তদন্তে গ্রেপ্তার, স্বীকারোক্তি আদালতে
মামলার বাদী নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসানের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে সন্দেহভাজন নুরজাহানকে আটক করে। তার জবানবন্দিতে বাকি তিন খুনির নাম উঠে এলে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে সবাইকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ফেরদৌসী বেগমের কানের দুল ও গলার চেইনও উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুলাই) তাদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তিন ভাড়াটে খুনিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সমাজে নেমে আসা প্রশ্ন
এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভ। স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক বিরোধে এভাবে পেশাদার খুনি ভাড়া করে হত্যা সমাজে নৈতিকতার চরম অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি। একই সঙ্গে নারী নির্যাতন ও পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন সকলে।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

আশুরা: ত্যাগ ও শোকের মহিমান্বিত দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক।।প্রতিবছর ১০ মহররম সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় ধর্মীয় শ্রদ্ধা ও ভাবগম্ভীর পরিবে...

বাংলাদেশ-জাপান অংশীদারত্ব জোরদারে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগ, মৎস্য, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ও যুব উন্নয়...

সতর্ক সংকেতে ৮ জেলা, ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা জারি
দেশের উপকূলীয় ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হা...

চলতি মাসের ১৩ জুলাইয়ের পর প্রকাশিত হবে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষ...
নিজস্ব প্রতিবেদকচলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য অ...

মাধ্যমিক পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধনে উদ্যোগ, শিক্ষকদের প্রস্তাব...
নিজস্ব প্রতিবেদক।।ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে চিহ্নিত ভুল ও ত্রুটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে...

কুমিল্লার মুরাদনগরে এগিয়ে আসেনি কেউ, কবর খুঁড়ছে গ্রাম পুলিশ
কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামে গণপিটুনিতে নিহত মা রোকসানা বেগম রুবি ও তার দুই সন্তান রাসেল ও জো...
